অগ্রদৃষ্টি ডেস্ক: চট্টগ্রামে একটি কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবেশ রক্ষার নামে উদ্ভট কথা বলে অযথা কতগুলো মানুষের জীবন পর্যন্ত গেছে।
তবে এই প্রকল্পের বিরোধীরা বলছেন, কোন ছাড়পত্র ছাড়াই নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে।
সোমবার এই প্রকল্পের পক্ষ এবং বিপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে পুলিশের গুলিতে চারজন প্রাণ হারায়।
ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি কারাগার উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে উদ্ভট কথা বলে কিছু মানুষের প্রাণহানি ঘটানো হয়েছে।
গত সোমবার সেখানে চারজন নিহত হন।
এছাড়াও বিরোধীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
মূলত জমি অধিগ্রহণ এবং পরিবেশের ক্ষতি এই দুটি ছিল তাদের মুল আপত্তির জায়গা।
কিন্তু চারজন নিহত ও পরিস্থিতি সহিংস আকার নিলে তাদের আরো দাবী যুক্ত হয়।
পরে স্থানীয় আন্দোলনকারীদের সাথে সংহতি জানাতে সেখানে যান তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বাঁশখালির ঐ বিদ্যুৎ প্রকল্পটির জন্য কোন পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ২৫০ কোটি ডলার ব্যায়ে কয়লা-ভিত্তিক এই প্রকল্পটির জন্য একটি চুক্তি হয়।
তখন জানানো হয়েছিল বিদ্যুৎ-কেন্দ্র স্থাপনের জন্য গণ্ডামারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমি কেনা হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক পরিবেশ ছাড়পত্র আনুষ্ঠানিক ভাবে না পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এই ছাড়পত্র এ সপ্তাহের মধ্যেই তারা পেয়ে যাবেন বলে আশা করছেন।
কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প হওয়ায় অন্তত তিন ধরণের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়।
কারণ পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী এগুলো মারাত্মক পরিবেশ দূষণকারী প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত।
যদিও প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা প্রাথমিকভাবে সেখানে কিছু কাজ শুরু করেছে।
তবে আনু মুহাম্মদ বলেছেন, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান প্রকল্প স্থানও নির্ধারণ করতে পারে না।
এদিকে, স্থানীয়ভাবে যারা আন্দোলন করছিলেন তারা ১৫ দিনের জন্য তাদের কর্মসূচী স্থগিত করেছে।
আর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি বলছে প্রকল্পের কাজ যেটা এখন বন্ধ আছে সেটা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা আবার শুরু করবেন।